আ.লীগ আমলেও নজরুল ইসলাম খানের ফোনে লেবার ডাইরেক্টর পরিবর্তন হতো: নাজির আহমেদ
নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং-ঢাকা ২৩০২)’র পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় ফতুল্লা থানাধীন পঞ্চবটি ইউনাইটেড ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত কমিটির সভাপতি মো: নাজির আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং দৈনিক দেশের আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আনিসুল ইসলাম সানি।
এছাড়া সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং-বি ২১২৭)-এর সাধারণ সম্পাদক মো: আনিছুর রহমান মাস্টার, বিশেষ আলোচন হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মো: তোফাজ্জল হোসেন তাপু, মো: আকবর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি আনিসুল ইসলাম সানি তার বক্তব্যে বলেন, আশাকরি আপনাদের থানা কমিটিগুলোকে সুন্দরভাবে সাজাবেন। এবং এ কমিটিগুলোতে যাতে কোন সুবিধাবাদী লোক বিশেষ করে অন্যদলের কেউ আসতে না পারে সেদিকে একটু সজাগ থাকবেন। শেখ হাসিনার পতনের পর আজকে সারাদেশের যে অবস্থা দেখতে পাচ্ছি, সেদিক থেকে আমাদের নারায়ণগঞ্জও পিছিয়ে নাই। এমন অবস্থা হয়েছে যে, বিভিন্ন সেক্টর দখলের প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। এমন কোন সেক্টর নাই সেখানে দখলের প্রতিযোগীতা শুরু হয় নাই। আজকে আমার মনে হয়, আজকে যদি ওসমান পরিবারও নারায়ণগঞ্জে থাকতো তাহলে মনে হতো তারাই সবচেয়ে বড় বিএনপি। এখন আমাদের অবস্থাটা হয়েছে এমন। যারফলে সাধারণ বিএনপি নেতাকর্মীরা যারা রয়েছেন, আমার মনে হয় তারা অতিতেই ভালো ছিলো।
তিনি বলেন, আমাদের অনেকেই ফোন করে বলেছে ‘আমার কাছ অমুকে অমুক দ্বারা চাঁদা চাচ্ছে।’ যাদের নাম আমার ৪৬ বছরের বিএনপির রাজনীতির ইতিহাসে কখনো শুনি নাই। আজকে তারা যে অবস্থা করছে অতিতে তারা যদি এ অবস্থায় থাকতো, তাহলে হয়তো শেখ হাসিনা পনেরো বছর আগেই পালিয়ে যেতো। এ বিষয়ে আপনারা সজাগ থাকবেন, সর্তক থাকবেন। কারণ, বিএনপির কোন লোক, শহীদ জিয়ার আদর্শের কোন সৈনিক, বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক, তারেক জিয়ার কোন সৈনিক, কোন চাঁদাবাজীর সাথে যুক্ত হতে পারেনা। এগুলো পতিত সরকারের অনুপ্রবেশকারিরা তাদের একটি নীলনকশার অংশ হিসেবে এসমস্ত অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে নাকি বিএনপির বদনাম হয়, তারেক রহমানের বদনাম হয়, আমাদের এবং আপনাদের বদনাম হয় এবং বিএনপির ভাবমুর্তি নষ্ট হয়। তাই বলছি, প্রয়োজনে এদেরকে ধরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে তুলে দেবেন, এঁরা আমাদের লোক না।
সভাপতির বক্তব্যে মো: নাজির আহমেদ বলেন, বিগত দিনে আমরা যা করছি আগামী দিনে শহীদ জিয়ার সৈনিক হিসেবে শ্রমিক আন্দোলনে অগ্রনায়ক হিসেবে আমরা একেকজন নিজেকে নজরুল ইসলাম খানের প্রতিনিধি মনে করে কাজ করতে হবে। শেখ হাসিনা অনেক কিছু পরিবর্তন করছে, কিন্তু নজরুল ইসলাম খানের চেয়ারটার কোন পরিবর্তন করতে পারেনাই। সম্ভব হয় নাই। কারণ, নজরুল ইসলাম খান আরেকজন জন্ম হয় নাই। ওই চেয়ারটায় কাউকে বসাতে পারেনি হাসিনা। নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বেই শ্রমিক দল। তার শিষ্যরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অনেক শিষ্য বড় বড় লেবার ডাইরেক্টর হয়েছে। তার ফোনে অনেক লেবার ডাইরেক্টর পরিবর্তন হয়। ওই আওয়ামী লীগ আমলেও হয়েছে। একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে তার আর্দশ বুকে ধারণ করতে হবে। তার প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। তাহলেই আমাদের যত আশা আকাঙ্খা আছে বাস্তবায়ন করতে পারবো।
বক্তব্য শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি নাজির আহমেদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সকল শাখা কমিটি, উপ-কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি ও স্ট্যান্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
এরপর প্রধান অতিথি আনিসুল ইসলাম সানি নতুন কমিটি ঘোষণা করেন এবং তাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মো: হাকীম রাজিবের সার্বিক তত্তাবধায়নে ও কমিটির ১নং কার্যকরী সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা মামুনুর রশিদ মামুন এবং নব নির্বাচিত কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক মো: শরিফের সঞ্চালনায় সভা উপস্থিত ছিলেন, নব নির্বাচিত কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক সজিব সরদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফরাত হোসেন, সাইদুল ইসলাম, কোষাধক্ষ্য এস এম মজিবুর, দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, প্রচার সম্পাদক জহুর আলী খান, কার্যকরী সদস্য সুরাব মিয়া, হাজী আবুল বাশার ভাষানী, হুমায়ূন কবির, আতাউর রহমান, মো: হাসতান হোসাইন, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাইফুল ইসলাম সুমন, আলতাফ হোসেন বাবু প্রমূখ।