ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ অনেক নির্বাচন দেখেছে। কিন্তু আগামীতে স্বচ্ছ, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। যেখানে পেশীশক্তির ব্যবহার হবে না, কালো টাকার ছড়াছড়ি থাকবে না এবং মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ভিত্তিতে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচন প্রত্যাশা করি। বাংলাদেশে মারামারি ও দখলদারির নির্বাচন পদ্ধতি ত্যাগ করতে চাই। সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।

তিনি আরও বলেন, আমার মন চায়-সবাই একই মঞ্চে বসে নির্বাচন করবে; একসাথে বসে দাওয়াত দেবে; একসাথে চা পান করবে; চলাফেরা করবে; জনগণ যাকে ইচ্ছা তাকে নির্বাচিত করবে। আমরা এমন পরিবেশ চাই। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক-সবাই একসাথে থাকতে চাই। দেশের উন্নয়ন, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা চাই সুন্দর পরিবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন উপহার দিক।
মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সদর) আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে এ নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
আপনি বারবার বলেছেন ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন হবে। আমরাও চাই ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকেই নির্বাচন হোক। কোনো দল বা ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। আমরা দেখছি-বর্তমানে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে।
যারা এতদিন ‘নির্বাচন, নির্বাচন’ জিকির করতেন, তারা এখন আর সেটি করছেন না। তারা যেন নির্বাচন ভুলে গেছেন। কারণ মাঠ পর্যায়ের জরিপে দেখেছেন-পায়ের নিচে মাটি সরে গেছে।
বাংলাদেশের জনগণ চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের ভোট দিতে চায় না। যারা বিদেশে টাকা পাচার করে-এমন মানুষকেও জনগণ দেখতে চায় না।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম আরও বলেন, গত ১৬ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। যদি এত বিপুল অর্থ দেশের মানুষের মধ্যে সুষম বণ্টন করা যেত, তাহলে দেশ ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ব্যাপক উন্নতি করতো।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে-ইসলামের পক্ষের শক্তি ও ইসলামের বিপক্ষের শক্তি; ভারতের পক্ষের শক্তি এবং দেশের পক্ষের শক্তি।
নারায়ণগঞ্জ–৪ (ফতুল্লা–সদর) আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জেলা সভাপতি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ এবং নারায়ণগঞ্জ–৪ আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি ইসমাঈল সিরাজীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।