৫ আগস্ট ২০২৪। দিনটিতে একদিকে যেমন বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠে নারায়ণগঞ্জবাসী, অন্যদিকে গোটা নারায়ণগঞ্জে চলে ধ্বংসের খেলা।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবরে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। এদিন বিকেল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থান লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। নানা বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর সবাই নেমে আসেন রাস্তায়।
শহরের প্রধান সড়ক বিবি রোডে ৩ কিলোমিটার জুড়ে মানুষ আর মানুষ। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে চলে আনন্দ মিছিল। চাষাড়া বিজয়স্তম্ভ ও ২নং রেলগেট এলাকায় মুক্তিযুদ্ধস্তম্ভের ওপর পতাকা উড়িয়ে আনন্দ উল্লাস করেন জনগণ। এছাড়া শহরের অলিগলিতে খন্ড খন্ড আনন্দ মিছিল করেছেন তারা।
এদিকে ৫ আগস্ট বিকাল ৩টার পর থেকে নারায়ণগঞ্জে চলে বেপরোয়া হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ। শহরের জামতলায় শামীম ওসমানের বাসভবনে ঢুকে সব আসবাবপত্র একে একে নিয়ে যান হামলাকারীরা। এরপর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এছাড়া চাষাঢ়ায় সেলিম ওসমানের বাড়িতেও ভাঙচুর লুটপাট চালানো হয়। ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন।
শুধু তাই নয়, আল্লামা ইকবাল রোডে শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের অফিসে ও সাত তলা বাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল নিয়ে যান হামলাকারীরা। এ সময় দুইটি গাড়ি ও সাতটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একই এলাকায় তোলারাম কলেজের মোড়ে শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের অফিসেও ভাঙচুর ও মালামাল লুটে নেওয়া হয়। এবং সেই সাথে পতন হয় ওসমান সাম্রাজ্যের।
তবে এদিন শুধু ওসমান সাম্রাজ্যেই হানা দেয়া হয়নি, শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, রাইফেল ক্লাব, জেলা পরিষদ ভবনে শহরের বিভিন্ন মার্কেট, বিপণি বিতান, শো-রুমেও হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া জেলা পুলিশ লাইন, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হামলা ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। খন্ড খন্ড গ্রুপ হয়ে এসব হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
তবে সারা শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চললেও কোথাও কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেখা যায়নি। খোদ পুলিশ আক্রমণের শিকার হয়েছে থানায় থানায়। ফলে মানুষের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়তেও দেখা গেছে এদিন।