ভাগ্নি জামাতা রফিক ও ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে সম্পত্তির জন্য পানিতে চুবিয়ে ৪ বছরের শিশু সন্তানকে হত্যা করার অভিযোগ তুলেছেন আনোয়ারা বেগম নামে এক মা। শিশুটি তার একমাত্র পুত্রসন্তান ছিলো বলেও জানিয়েছেন তিনি। বড় সখ করে মা তার নাম রেখেছিলেন নয়ন। কিন্তু কে জানতো মাত্র ৪ বছরেই নিভে যাবে তার জীবন।
মা আনোয়ার বলছেন, তার স্বামী মৃত ওয়াজ উদ্দিন ভূইয়ার সকল সম্পত্তির একমাত্র ওয়ারিশ ছিলো তার সেই শিশু সন্তানটি। দীর্ঘ বহুবছর যাবৎ তার স্বামীর ভাগ্নি জামাতা রফিক ও ডা: ইউসুফ মিলে তাদের সম্পত্তি গ্রাস করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ওয়ারিশ থাকায় সম্পত্তির দখলে তাদের অসুবিধা হচ্ছিলো। তাই তারা ওয়ারিশ মুছে ফেলার জন্য তার একমাত্র পুত্র সন্তানকে হত্যা করে। তিনি তার পুত্র হত্যার বিচারসহ দম্পত্তি ফিরে পাওয়া দাবি জানান।
বুধবার (০৫ নভেম্বর) বিকেলে শিশুটির মা আনোয়ারা বেগম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন। ফতুল্লা থানাধীন কায়েমপুর এলাকায় নিজ বাসায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেল লিখিত বক্তব্যে আনোয়ারা বেগম জানান, আমার স্বামী মৃত ওয়াজ উদ্দিন ভূইয়া ১৯৭২ সালের ১লা নভেম্বর জমিটি মদুসুধন দত্ত, মহেন্দ্র চন্দ্র, রাজন্দ্রে জগদিশ চন্দ্র দত্তের কাছ থেকে কিনে নেন। এরপর থেকে আমরা এখানেই বসবাস করে আসছি। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসের ৮ তারিখ মৃত স্বামির ভাগ্নি জামাতা রফিক ও ডাঃ মোঃ ইউসুফ আলী সরকার সহ ৫/৭ জন সন্ত্রাসী জমি দখলের পায়তারা করে। ২০০৭ সালের ২ জানুয়ারি বাড়ির ভিতরে বোমা ও দেশিয় পাইপগান রেখে আমার পরিবারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশ বিচক্ষনতার সাথে কাজ করে মূল আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করে।
তিনি আরও বলেন, এতকিছুর পরেও তারা ব্যর্থ হয়ে আমার ৪ বছরের শিশু সন্তান নয়নকে কায়েমপুর সিরাতুন মুনতাহা মসজিদ সংলগ্ন জলাশয়ে চুবিয়ে হত্যা করে। পুলিশ তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করে ঘাতকদের জেলে পাঠায়। জমি রক্ষার্থে আদালতের স্মরনাপন্ন হলে বিবাদীদের বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে। কিন্তু তবুও তারা থেমে থাকেনি। গত ২০১৭ সালে ৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের চিহ্নত সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পলাতক শামীম ওসমানের গৃহপালিত নেতা শাহ নিজাম সহ বিবাদীগন ও ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী আমাকে ও আমার মেয়ে নার্গিসকে পিস্তল তাক করে ৪টি দলিলে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং সে রাতেই আমাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বিগত আট বছর এ বিষয়ে কোন সুরাহা না পেয়ে গত ২২ অক্টোবর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করি। যার নং- ৬৩৮/২৫।
আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা, দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, বাড়ি দখলমুক্ত এবং সন্তান হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ারা বেগমের সাথে তার মেয়ে নার্গিস আক্তার, নাতি মেহেদি হাসান নাহিদ সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।