এবার নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে মাঠে নামছে যৌথবাহিনী। মাদকের গডফাদার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরাই এ টার্গেট বলে জানাগেছে। সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি সপ্তাহেই অভিযানে নামার কথা এ বাহিনীর।
জানাগেছে, পাঁচ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজদের ভয়াবহতা, মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারি বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে এ বাহিনী। চলতি সপ্তাহের যে কোন দিন মাঠে নামবেন তারা। অভিযানে চাঁদাবাজ, মাদক-সন্ত্রাস ছাড়াও দাগি অপরাধী ও ছাত্র জনতা হত্যাকারিদের আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে জেলা পুলিশ প্রশাসন ও যৌথবাহিনী এ অভিযান পরিচালনা করবেন বলে একাধীক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্র মতে, পাঁচ আগস্টের পর সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও সমানতালে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজী, লুটপাটে মেতে উঠে এক শ্রেণীর মানুষ। শুধু তাই নয়, নামে বেনামে সংগঠন খুলে এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও লোকদের জিম্মি করে চাঁদাবাজীতে মেতে উঠে বেশ কয়েকটি মহল। তারা একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন হবে জানাগেছে।
বর্তমানে ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরী, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড, শহরের বাস স্ট্যান্ড, ট্রাক স্ট্যান্ড, অটোরিকশা স্ট্যান্ড, হকার, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের তেলের ডিপো, চাষাঢ়া ও সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইলের বাস কাউন্টার, শহরের নয়ামাটি ও দেওভোগ মার্কেটের হোসিয়ারী, শহরের ১নং খেয়াঘাট (সেন্ট্রাল ঘাট), দিগুবাবুর বাজার, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছ ঘাট, বন্দর বাজার ও স্ট্যান্ড, নৌযান শ্রমিক কার্যালয় ও বাসচালক শ্রমিক কার্যালয়সহ সকল কিছু দখল করে নিয়েছে ওই রাজনৈতিক দলের পরিচয়দানকারি মহলগুলো।
এসব দখলের ঘটনায় নিজেদের মধ্যে একাধীক বার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। যেখানে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে ওই মহলগুলো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এর পাশাপাশি ব্যাপকভাবে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে মাদক। বর্তমানে মাদক হোম ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। মূলত এসব অপকর্ম রোধেই অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারি বাহিনী। অভিযানে যৌথবাহিনীও অংশ নেবে বলে একাধীক সূত্রে জানাগেছে।
এদিকে এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে সচেতন নগরবাসী। তারা বলেন, অভিযানে যদি সত্যি সত্যিই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয় এবং বাস্তবায়িত হয় তাহলে এ অভিযানে আমরা আইনশৃঙ্খলার উন্নতি আশা করছি। আমরা চাই এ অভিযান যেন কঠোর থেকে কঠোরতর। কে কোন রাজনৈতিক দলের অনুসারি, কে কত ক্ষমতাবান এসব যেন কোনভাবেই তাদের অভিযানকে প্রভাহিত করতে না পারে। আইন যেন সকলের জন্য সমানভাবে প্রয়োগ হয় আমরা সেটাই দেখতে চাই।
সচেতন নগরবাসী আরও বলেন, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের যে ভয়াবহ অবস্থা বিশেষ করে চাঁদাবাজী, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং জবরদখল। তাদের অভিযানে এসব অপকর্ম অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমরা আশা রাখতে চাই। আমরা তাদের প্রতি আস্থা রাখতে চাই যে, তারা এ অভিযানে মধ্যদিয়ে আমাদের নিরাশ করবেন না। নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকে নিয়ে আসবেন আমরা যৌথবাহিনীর কাছে এটাই প্রত্যাশা করি। প্রয়োজনে তাদের পাশেও আমরা থাকতে রাজি আছি।