তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (জোবিঅ) ফতুল্লা শাখার ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মশিউর রহমান যোগদান করেছে প্রায় দুই বছর হলো। যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানীর সেই ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে এসে প্রতিদিন অফিস করেন তিনি। এতদূর থেকে এসে অফিস করলেও কখনও অফিসের ঘড়ির কাটায় সকাল ৯টার বেশি বাজতে দেননি তিনি।
এদিকে যোগদানের পর থেকে দুই বছরে প্রায় ১০০ টিরও বেশি অবৈধ উচ্ছেদ, বিশেষ অভিযানসহ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এ প্রকৌশলী মশিউর রহমান। শুধু তাই নয়, এসব অভিযানে আপোষহীন থাকার কারণে অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীরা তার উপর বেশ কয়েকবার হামলাও চালায়। এসব হামলায় একাধীকবার আহতও হন তিনি। তবুও থেমে থাকেন নি। এখনও তিনি অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে এক প্রকার লড়াই করে যাচ্ছেন।
জানাগেছে, জোবিঅ-ফতুল্লা এলাকা কোম্পানির একটি লো-প্রেসার জোন। স্বল্প গ্যাস চাপের কারণে প্রায়ই এলাকাবাসী দলবল নিয়ে অভিস ঘেরাও করে থাকে। আর এসব ঘটনা স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে অত্যান্ত ধৈর্যের সাথে মোকাাবিলা করে থাকেন তিনি। এসব মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে অনেক সময় অফিসের কর্মঘন্টা পাড় হয়ে গেলেও নিজ ব্যক্তিগত সময়গুলোও কোম্পানির সুনাম রক্ষা ও ভাবমূর্তি উজ্জল করার জন্য ব্যয় করেন তিনি।
বর্তমানে তার অধীনে জোবিঅ ফতুল্লাতে প্রায় ৫ শতাধীক মিটারযুক্ত শিল্প, ক্যাপটিভ, বাণিজ্যিক শ্রেণীর গ্রাহক এবং প্রায় ৪০ হাজার মিনারবিহীন আবাসসিক গ্রাহকের মধ্যে প্রতিমাসে প্রায় শতাধীক গ্রাহক নথি অগ্রায়ন করা হচ্ছে।
তবে কোম্পানির সুনাম রক্ষার্থে এত শ্রম দিলেও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। কিছু অসাধু ব্যক্তিবর্গকে অবৈধ গ্যাস সুবিধা না দেওয়ার কারণে প্রায়ই তাদের আক্রমণের শিকার হন জোবিঅ’র এ কর্মকর্তা। ওই অসাধু ব্যক্তিরা সরাসরি আক্রমন না করলেও ষড়যন্ত্র করে এবং তার বিরুদ্ধে নানা সময়ে অপপ্রচার করে তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। সম্প্রতি ওই কুচক্রি মহলটি ভুল তথ্য দিয়ে সৎ নিষ্ঠাবান ও পরিশ্রমী এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে তাকে ঘায়েল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকাশিত ওই সংবাদে বলা হয়েছে, তিতাস গ্যাসের ফতুল্লা আঞ্চলিক বিক্রয় অফিসের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমানের যোগসাজশে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তারা। দিনভর তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ও অনুমোদিত লোডের বিনিময়ে সংগ্রহ করা হয় ঘুষ। এরপর সেই টাকা ভাগাভাগি করা হয় ওই দপ্তরে বসেই। প্রতিবেদকের দাবি, টাকা ভাগাভাগির এমন একটি ভিডিও তার কাছে সংরক্ষিত আছে। যে ভিডিওতে টাকা ভাগভাগি করতে ফতুল্লার সহকারি কারিগরি কর্মকর্তা মো: হারুন শেখ, সিনিয়র প্রকর্মী (জোনাল) ইসমাইল প্রধান, পিসি অপারেটর মো: হাসান ইমাম, সাহয্যকারি মো: সামছুদ্দিন ও সিনিয়র গাড়িচালক মো: সোলাইমানকে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জোবিঅ ফতুল্লা শাখার ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারী এ ভিডিওর বিষয়ে আমি অবগত হই। আমি অবগত হওয়ার সাথে সাথে এ বিষটি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষনিকভাবে ভিডিওতে দৃশ্যমান ব্যক্তিদেরকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে। পরবর্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে উল্লেখিত ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এ ঘটনায় আমাকে জড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি কুচক্রমহল অবৈধ সুবিধা নেয়ার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো। কিন্তু আমি তাদের কথায় সম্মতি না দেওয়ায় এবং ওই অবৈধ গ্যাস সুবিধা না দেওয়ায় তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছে। আমি পরিস্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন আমি কাউকে কোন ধরনের অবৈধ সুবিধা দিতে পারবো না। সৎ ভাবে কাজ করে যাচ্ছি, বাকিটা সময় সৎ ভাবেই কাজ করে যাবো। সৎ ভাবে বেঁচে থাকতে গিয়ে যদি আমাকে লাইফ রিস্কে পডে যায়, যাবো। কোন আফসোস নাই। তবুও কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করবো না। এ ধরণের অপপ্রচার এর বিরুদ্ধে আইনগত সহায়তা নেবেন বলেও জানান তিনি।